ধর্ম মানুষের সামাজিক ইতিহাসে, পরিবারের পরেই আদি সামাজিক প্রতিষ্ঠান।তাই ধর্ম একটি শি৩শালী সামাজিক প্রপঞ্চ। পৃথিবীর সকল দুঃখ, দুর্দশা,হতাশা আর প্রবঞ্চনা, আবেগ ভয়ভীতি থেকে মানুষের একমাত্র আশধয় ̄’লহলো এই ধর্ম। যুগে যুগে ধর্ম বিবর্তিত হয়েছে এবং বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সংস্কারক যুগে যুগে একে সংস্কার করেছেন। ফলে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিতহয়েছে বিভিন্ন ধর্ম। এই ধর্মই ধারণ করে সকল সামাজিক প্রথা, আচার—আচরণ, বিধি—নিষেধ। ধর্ম তাই সামাজিক বন্ধন ও শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি শি৩শালী হাতিয়ার।
ধর্মই মানুষের আবেগের শেষ আশ্রয়স্থল। প্রতিটি মানুষ তাই একে ধরে রাখে তার অন্তরের গভীর মূলে, সে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সকলে। তাই ধর্ম মানুক আর না মানুক কেউই ধর্ম নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চায় না। এর সুযোগ নেয় কতিপয় স্বার্থচালিত মানুষ, যারা ধর্মকে পুঁজি করে অবতীর্ণ হয় ধর্ম রক্ষকের ভূমিকায়। প্রকৃতপক্ষে ধর্ম রক্ষার চেয়ে এদের নিজেদের রক্ষাই মূলকথা। এই ভারত উপমহাদেশেও বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন ধর্মে মৌলবাদীরা ছিল। দ্বাদশ শতাব্দীতে এই উপমহাদেশে ইসলামের আগমন হলেও তার আটশত বছর পরে আজও এ ভূখণ্ডে সনাতন হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন প্রভৃতি ধর্মের আছে এসব ধর্মের মৌলবাদীদের জন্যই। আর ইসলাম সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বমানুষের জন ̈ শাশ্বত ধর্ম হলেও ইসলামি মৌলবাদীরা একে দাঁড় করিয়ে রাখতে চায় সেই সপ্তম শতাব্দীর প্রথম ভাগে যা কিনা ছিল অসভ্য আরব সমাজে। এরা এদের নিজেদের সার্থে ইসলামের শাশ্বত আরবের অসভ্য বর্বর সমাজোপযোগী বেখ্যা আজও দিয়ে যাচ্ছে। এই মৌলবাদীরা তাদের সার্থেই দেশে দেশে সাম্প্রদায়কতার উগ্রতা সৃষ্টি করছে। কারণ তা না হলে যুগ চেতনার জন্য তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। যুগ চেতনার জন্য, এদের সাম্প্রদায়িকতার জন্যই প্রাচীন ও মধ ̈যুগের পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ জাতিসমূহের অন্যতম জাতি ‘বাঙালি জাতি’ আজ বিলীন হতে বসেছে।
এ গ্রন্থে আমি শুধু দুই বাঙলার বাঙালি জাতিকে মৌলবাদীদের থেকে সতর্ক হয়ে তাদের পুনর্জাগরণের কথা বলেছি, যা এ গ্রন্থের মূল লক্ষ। যদি এ গ্রন্থ পড়ে দুই বাংলার একজন বাঙালিও তার হারানো জাতি সত্তা ফিরে পেতে উদ্বুদ্ধ হয় আর মৌলবাদীদের থেকে সতর্ক থাকে তবেই নিজেকে সার্মথ মনে করবো।
ড. মশিউর মালেক